M.AITPostAd

জীবন বাঁচাতে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান-জীবনে বিজ্ঞানের ভূমিকা

 জীবন বাঁচাতে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান-জীবনে বিজ্ঞানের ভূমিকা

জীবন বাঁচাতে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান-জীবনে বিজ্ঞানের ভূমিকা

মানুষের জীবনে বিজ্ঞানের অবদান কী?

বেঁচে থাকার জন্য মানুষের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো একটি সুস্থ, সবল ও নিরোগ দেহ। কিন্তু বাস্তব জীবনে আমরা সব সময় সুস্থ থাকতে পারি না। বিভিন্ন সময়ে নানা রোগে আক্রান্ত হই। রোগাক্রান্ত হলে সঠিক চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরি, আর সঠিক চিকিৎসার প্রথম শর্ত হলো যথাযথ রোগ নির্ণয়। আধুনিক যুগে চিকিৎসাব্যবস্থা ব্যাপকভাবে উন্নত হয়েছে। বিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্ব ও প্রযুক্তির প্রয়োগে উদ্ভাবিত হয়েছে আধুনিক রোগ নির্ণয় যন্ত্রপাতি, যার ফলে মানুষের বিভিন্ন স্বাস্থ্যসমস্যা দ্রুত ও নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। বিশেষ করে পদার্থবিজ্ঞানের ব্যবহার চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

Read more:কিভাবে প্রযুক্তি আমাদের জীবনে উন্নয়ন করছে-বিভিন্ন প্রযুক্তির বর্ণনা

জীবন বিজ্ঞানের ভূমিকা কী?

একসময় চিকিৎসকেরা রোগীর বাহ্যিক লক্ষণ ও উপসর্গ দেখে রোগ নির্ণয় করতেন। এতে অনেক ক্ষেত্রেই রোগ নির্ণয় সঠিক হতো না এবং চিকিৎসাও ছিল অনুমাননির্ভর। আধুনিক যন্ত্রপাতির আবিষ্কারের ফলে এখন রোগ নির্ণয় শুধু নিখুঁতই নয়, চিকিৎসাও অনেক বেশি কার্যকর হয়েছে। স্বাস্থ্যবিজ্ঞানে ব্যবহৃত আধুনিক যন্ত্রগুলো মানুষের জীবন বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এক্স-রে করলে কি ক্ষতি হয়?

১৮৯৫ সালে বিজ্ঞানী উইলহেল্ম কনরাড রন্টজেন এক ধরনের উচ্চশক্তির অদৃশ্য রশ্মি আবিষ্কার করেন, যা মানবদেহের মাংসপেশি ভেদ করে ভেতরের অংশের ছবি তুলতে সক্ষম। এর প্রকৃতি অজানা থাকায় এর নাম দেওয়া হয় এক্স-রে। এক্স-রে মূলত একটি বিদ্যুৎচুম্বকীয় তরঙ্গ, যার তরঙ্গদৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোর তুলনায় অনেক কম এবং শক্তি অনেক বেশি।

এক্স-রে টিউবে ক্যাথোড ও অ্যানোডের মধ্যে উচ্চ ভোল্টেজ প্রয়োগ করলে ইলেকট্রন অ্যানোডে আঘাত করে এবং সেই আঘাতের ফলে এক্স-রে উৎপন্ন হয়। এই রশ্মি বিভিন্ন ঘনত্বের বস্তু ভেদ করতে পারে, ফলে দেহের অভ্যন্তরীণ গঠন দেখা সম্ভব হয়।

এক্সরে কী ধরনের বিকিরণ?

হাড়ের ভাঙন, ফাটল ও স্থানচ্যুতি নির্ণয়
দাঁতের ক্ষয় ও ক্যাভিটি শনাক্তকরণ

ফুসফুসের রোগ যেমন যক্ষা, নিউমোনিয়া ও ক্যান্সার নির্ণয়
কিডনি ও পিত্তথলির পাথর শনাক্ত

ক্যান্সার চিকিৎসায় রেডিওথেরাপিতে ব্যবহার

এক্স-রে বিকিরণ ক্ষতিকর হতে পারে বলে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে এক্স-রে এড়িয়ে চলা হয় এবং শরীরের বাকি অংশ সিসা এপ্রোন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।

Read more:কমলা গাছের যত্ন এবং পরিচর্যার পদ্ধতি

আল্ট্রাসনোগ্রাফির প্রয়োজনীয়তা

আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দতরঙ্গ (১–১০ মেগাহার্টজ) ব্যবহার করে শরীরের ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ছবি তৈরি করা হয়। ট্রান্সডিউসার নামক যন্ত্র থেকে উৎপন্ন শব্দতরঙ্গ দেহের ভেতরে প্রবেশ করে প্রতিধ্বনি সৃষ্টি করে, যা বিশ্লেষণ করে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবিম্ব তৈরি হয়।

জীবন বাঁচাতে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান-জীবনে বিজ্ঞানের ভূমিকা

আল্ট্রাসনোগ্রাফির ব্যবহার:

গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের গঠন ও অবস্থান নির্ণয়

জরায়ু ও পেলভিক টিউমার শনাক্ত
পিত্তপাথর, টিউমার ও হৃদযন্ত্রের ত্রুটি নির্ণয়

হৃদপিণ্ড পরীক্ষায় ইকোকার্ডিওগ্রাফি
এক্স-রের তুলনায় এটি নিরাপদ হলেও দীর্ঘ সময় একটানা ব্যবহার না করাই উত্তম।

রোগ নির্ণয়ে সিটি স্ক্যানের ভূমিকা

সিটি স্ক্যান (Computed Tomography) হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে এক্স-রের সাহায্যে শরীরের অভ্যন্তরের ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করা হয়। এক্স-রে টিউব রোগীর চারপাশে ঘুরে বিভিন্ন দিক থেকে ছবি তোলে, যা কম্পিউটার বিশ্লেষণ করে একটি স্পষ্ট প্রতিবিম্ব তৈরি করে।

সিটি স্ক্যানের ব্যবহার:


মস্তিষ্ক, ফুসফুস ও রক্তনালীর সমস্যা নির্ণয়

ক্যান্সার ও টিউমারের অবস্থান ও আকার নির্ধারণ

মাথার ভেতরের রক্তপাত বা ধমনীজনিত সমস্যা শনাক্ত

গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান করা হয় না এবং কনট্রাস্ট রঙ ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।

এমআরআই করার প্রয়োজনীয়তা

মানবদেহের অধিকাংশ অংশে পানি রয়েছে, যার হাইড্রোজেন প্রোটন শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া দেখায়। এই নীতির ওপর ভিত্তি করেই ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (MRI) তৈরি হয়েছে। এতে এক্স-রে নয়, বরং চৌম্বক ক্ষেত্র ও রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করা হয়।

এমআরআই দেহের নরম টিস্যু, মস্তিষ্ক, স্নায়ু ও মেরুদণ্ডের অত্যন্ত স্পষ্ট ছবি দিতে সক্ষম।

ইসিজির কার্যপ্রণালী


ইসিজি (Electrocardiogram) হলো হৃদপিণ্ডের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ রেকর্ড করার একটি পদ্ধতি। হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক স্পন্দন নির্ণয়ে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ইসিজির মাধ্যমে শনাক্ত করা যায়:

হৃদস্পন্দনের অস্বাভাবিকতা
হার্ট অ্যাটাক
হৃদপিণ্ডের আকার বৃদ্ধি

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ও অস্ত্রোপচারের আগে ইসিজি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
এন্ডোস্কোপি কাকে বলে

এন্ডোস্কোপি হলো এমন একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে শরীরের ভেতরের ফাঁপা অঙ্গ সরাসরি দেখা যায়। অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে আলো প্রবেশ করিয়ে অভ্যন্তরীণ অংশের ছবি দেখা সম্ভব হয়।

জীবন বাঁচাতে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান-জীবনে বিজ্ঞানের ভূমিকা

এন্ডোস্কোপির ব্যবহার:

পাকস্থলী ও অন্ত্র
ফুসফুস

স্ত্রী প্রজনন অঙ্গ
মূত্রনালী ও নাসাগহ্বর
এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ ও ছোটখাটো অস্ত্রোপচারও করা যায়।

Read more:মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার কার্যকরী উপায়

উপসংহার

উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম, মানবজীবনে স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক চিকিৎসা যন্ত্রপাতির কল্যাণে আজ জটিল রোগও সহজে শনাক্ত ও চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে এবং অসংখ্য প্রাণ রক্ষা পাচ্ছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪